বাবা যদি কোনোভাবে ব্যর্থ হয়, তাহলে সন্তানের কী হবে...

 

বাবা যদি কোনোভাবে ব্যর্থ হয়, তাহলে সন্তানের কী হবে...


প্রায় ৪ দশকের অভিনয়জীবন মিশা সওদাগরের। অন্যদিকে শাকিবের আড়াই দশক। শাকিব তাঁর অভিনয়জীবনের শুরু থেকেই খলনায়ক হিসেবে পেয়েছেন মিশাকে। শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তাঁরা। ঢালিউড সংশ্লিষ্টদের কারও মতে, নায়ক ও খলনায়কের দারুণ জুটি হয়ে উঠেছেন শাকিব খান ও মিশা সওদাগর। এই দুজনের সিনেমা হিট–সুপারহিট এবং ব্লকবাস্টারও হয়েছে। গেল ঈদুল ফিতরে ‘বরবাদ’ সিনেমায় নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে খলনায়ক মিশা সওদাগর পর্দায় হাজির হয়েছেন বাবার চরিত্রে। যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা একবাক্যে আরিয়ান মির্জা (শাকিব খান) ও আদিব মির্জার (মিশা সওদাগর) পর্দায় উপস্থাপন উপভোগ করেছেন।

বাবার চরিত্রে মিশার অভিনয় প্রশংসিত হলেও শুরুতে এই চরিত্র নিয়ে চিন্তিত ছিলেন মিশা। জানালেন, এই ধরনের চরিত্রের ঝুঁকিও ছিল। তবে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। মিশা বলেন, ‘এই চরিত্রের জন্য আমি মাস ছয়েক প্রস্তুতি নিয়েছি। সময়টাও পেয়েছিলাম, কারণ তখন আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোর বিষয় ছিল, ওরা সেখানে পড়াশোনা করে। যেহেতু ওখানে ৬ মাস ছিলাম, ওই সময়ের পুরোটায় আমি আদিব মির্জা হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। আমার সামনে অনেকগুলো রেফারেন্স ছিল। পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি। শাকিবের সঙ্গেও আলাপ করেছি। কারণ এবারই প্রথম আমরা বাবা–ছেলের চরিত্রে অভিনয় করেছি।’

খল চরিত্রের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী মিশা সওদাগরের স্ত্রী ও সন্তানেরা এখন বছরের বেশির ভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে থাকেন। কাজের ফাঁকে মিশাও ছুটে যান তাঁদের কাছে। এদিকে দেশে ও দেশের বাইরের প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে মিশা অভিনীত ‘বরবাদ’।


এ সময়টায় দেশে নেই এই অভিনয়শিল্পী। ১৪ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশ ছাড়েন। সন্তানের পরীক্ষা এবং নতুন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কারণে এবারও লম্বা সময় থাকতে হবে তাঁর। সবকিছু গুছিয়ে নিতে আগামী ঈদুল আজহা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে। এরপর দেশে ফেরার চিন্তা রয়েছে তাঁর, জানালেন মিশা। দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরের প্রেক্ষাগৃহেও এখন প্রদর্শিত হচ্ছে ‘বরবাদ’। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশে ছবিটি প্রদর্শিত হলেও ডালাসে এখনো ছবিটি দেখানো হচ্ছে না। সেখানকার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেই পরিবার নিয়ে দেখার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছেন বলে জানালেন মিশা।



                         



তিনি বলেন, ‘বরবাদ ছবিতে আমি কয়েকটি গেটআপে হাজির হয়েছি। সব মিলিয়ে সেভাবে আমাকে তৈরি হতে হয়েছে। ভয়েস মডিউলেশন নিয়েও কাজ করতে হয়েছে। আমাকে সাধারণত অন্য সব ছবিতে দেখা যেত, এখানে একেবারে অন্য রকম ছিল। ছবিতে আমি শাকিবের বাবা। এমন চরিত্রে আমি আগে করিনি। শাকিব হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির বরপুত্র। ওই সন্তানের বাবা হয়েছি, পর্দায় কী তৈরি হবে—এটা সার্বক্ষণিক আমার মাথায় কাজ করত। বাবা যদি কোনোভাবে ব্যর্থ হয়, তাহলে সন্তানের কী হবে! আমার ক্যারিয়ারেরও সমস্যা তৈরি হবে। মানুষ লেখালেখি করবে। আমি তাই খুব চিন্তায় ছিলাম। শাকিবের সঙ্গে বোঝাপড়ার বিষয়টা নানা হিসাব–নিকাশে তৈরি করেছি। আমার সারা জীবনের অভিনয়ের অভিজ্ঞতা এই ছবিতে কাজে লাগিয়েছি।’


কথা প্রসঙ্গে মিশা আরও বলেন, ‘এই ছবিতে অভিব্যক্তি আর অভিব্যক্তি। সংলাপ থেকে অভিব্যক্তি ছিল বেশি। আমার চোখে যে পানি ছিল, তা কিন্তু গ্লিসারিনের ছিল না। একেবারে ন্যাচারাল ছিল। যেকোনো দৃশ্যের শুটিংয়ের আগে আমি পরিচালককে বলেছি, শুধু ১০ মিনিট সময় দাও। তারপর আমি ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতাম।’
‘বরবাদ’ ছবির গল্প শুনে নড়েচড়ে বসেছিলেন মিশা, কথা প্রসঙ্গে তা–ও বললেন। মিশা বলেন, ‘গল্প শোনাতে শোনাতে পরিচালক হঠাৎ যখন বিরতির সময়টা বলল, তখন আমি নড়েচড়ে বসি। ভাবলাম, হোয়াট আ ডাইমেনশন। তারপর পুরো গল্প শুনে হ্যাঁ করে দেই। বাবা–ছেলের চমৎকার মনস্তাত্ত্বিক কিছু বিষয় ছিল। দর্শকেরা দেখি এখন বাবা–ছেলে নিয়ে কথা বলছে। মনে হচ্ছে, চ্যালেঞ্জ ও ঝুঁকি সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি।’

Post a Comment

Previous Post Next Post